স্বপ্ন দেখতে ব্যয়ের কোন বাধ্যবাধকতা নাই,,,
লাভলু রশিদ,,,
এই আধপৌঢ়ে’র গতানুগতিক জীবনে একমাত্র স্বপ্নজাল,,আর কল্পনা-বিলাস’ই আমার এখন পর্যন্ত একমাত্র সম্বল,,, শুধুমাত্র নিজস্ব পরিশ্রমটাকে এবং আদর্শচিত্তের তাছিল্যের ক্ষুদ্র নৈতিকতাকে যোগ্যতার অনুষঙ্গ ভেবে নির্বোধের বেশে আকড়ে ধরে চলছি মাত্র,,, এমন অনেক সময়’ই আসে আচমকা বেদনায় নীল হয় মন,,,আনমনে ছুটে যাই খোলা আকাশের নিরাপদ ছাউনিতে,,আলতো বাতাস ছুঁয়ে যায় আমাকে,,,!
যখন তাকিয়ে থাকি দিগন্তে ফেনীল মেঘ-পুঞ্জ গুলো ভেসে চলছে,,,হয়তো কোন বিরহী প্রিয়ার সন্ধানে,,
ভাবতে ভাবতে কখন সখনো হারিয়ে যাই অতীতে,,,
বাবার ঘাম ঝরার শব্দ,মা’র রাতজাগা ক্লান্ত মূখের ছবি ভেসে উঠে নয়নের সলিল অারাধনায়,,,প্রতিটি প্রকৃতি উপাদান কত পরম যত্নে-নিবির মমতায় আমায় গড়ে তুলেছেন,,,সবার প্রতি দ্বায়বদ্ধতা অনূুভূত হয়,,,
কষ্টবোধ তীব্রভাবে খুচিয়ে-খুচিয়ে আহত করে ইস্পাত কঠিন আত্মাটাকে,,, অনেক সময় দ্বায়িত্ববোধের মাপকাটিও সংকুলান হয় না নিদারুন কোন অপ্রাপ্তীর বাস্তবতায়,, অসংখ্য প্রয়োজনীয় আবদারে সবচেয়ে মূল্যবান পুরুস্কার হিসেবে হৃদয় নিংড়ানো আদর পেয়ে নির্বাক তাকিয়ে থাকা-অনাদরে-অযত্নে বেড়ে উঠা আমার ঔরসজাত আদরের তনয়-তনয়া’র মায়াবী মূখশ্রীতেই বেশিদিন বেঁচে থাকার তাগিদ আসে,,,প্রিয়তমা স্ত্রীর সুশ্রী ডাগর চোখের তৃষ্ণা মেটাই ভীমরথীর আহ্লাদীতে- নিবির আলিঙ্গনে বিশ্বস্ত হই দুজনে-বিড়বির করে আওড়াই-আমার বেঁচে থাকার প্রার্থনাতে-বৃদ্ধ হতে চাই তোমার সাথে,,,হয়তো এভাবে’ই আশা-নিরাশার দোলাচালে নিভূ নিভূ প্রদীপ শিখাটি,,ধপ করে নিভেও যাবে কোন একদিন।
সেইসাথে আমিও চলে যাবো বর্নাঢ্য কোন শব’যাত্রায় অথবা অনারম্বর কোন “চিরবিদায় ষ্টোরের” সুগন্ধিযুক্ত কফিনের মোড়কে পেঁচিয়ে,,, আশশাহ্দু আল লাইলাহা ইল্লালাহু,,, মুহাম্মাদুর রসুরুল্লাহ (সঃ),,,জিকির-ধ্বনিতে,,,
চলে যাবো পৃথিবী ছেড়ে- চির নবান্নের দেশে,,,
হয়তোবা ঝলমলে রূপালী চাঁদের জোসনার আলোকচ্ছটায়,,,অথবা নিকষ কালো অন্ধকারাচ্ছন্ন রাত্রীর যাত্রী হয়ে,, একমাত্র নিশ্চয়তাকে’ই সঙ্গী করে,,, জেনে যাবো সবকিছুই বড় দেরীতে আসে,,বড় দেরীতে ধরা দেয়,,, আসলে কষ্টটা ঠিক এভাবেই এসেছিলো,,, এভাবেই থাক,,,,
আমাদের জীবনপ্রবাহ অনেকটা এরকমের সম্ভব-অসম্ভব-স্বপ্ন-আকাঙ্খা আর বাস্তব অবাস্তবের মুখাপেক্ষী,, কোনকিছু পাওয়ার জন্য অপেক্ষা, অপেক্ষার পর অপেক্ষা,,, অতঃপর, সেই অপেক্ষারও যখন অপমৃত্য হয়- তখন অবচেতনভাবে মনের সাথে প্রত্যেকেই বাকবিতণ্ডা করি- কেউ হয়তো কপাল চাপড়াই- হায়রে জীবন,,! হায়রে মৃত্যু,,! তোমাকেও এত বিচিত্র অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হতে হয়,,,????
প্রত্যেক মানুষের জীবনে এমন সময় আসে- যখন প্রয়োজন হয় নিশ্চিত নির্ভরতা,, অনেককিছু পাওয়ার মাঝেও কোনকিছু না পাওয়ার বেদনাহত হৃদয় যখন হু হু করে উঠে- ঠিক তখনই পরম প্রিয়জনের সান্নিধ্যের সংস্পর্শে এসে রিক্ততার জ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যকুল যে অভিলাষ তার নামই তো জীবন।
বৈচিত্র্যময় পৃথিবীর নিগুঢ়তার মাঝে কখনও আমার অবস্থান নিয়ে ভাবলে হৃদয় জুড়ে অস্তিত্বের বিলুপ্তি ঘটেছে,,! পারিনি সংবরন করতে,,, এই পৃথিবীর আকাশ-বাতাস স্রোত-ঝর্না সবকিছুই চলছে স্বাভাবিকভাবে,,, প্রায়শই কেন যেন মনে হয়- শুধু শুধু আমার মাঝে কেন এত অস্বাভাবিকতা,,,,,,?
তবে কি,,জীবনের সুখদ্যুলো বাতায়নে শুধুই বেচেঁ আছি শ্মশ্বানের চিতা হয়ে,,,?
আমার চারপাশের সার্বোক্ষনিক কাকনের রিনিক-ঝিনিক শব্দে নিরীহ রজনীর ফুটন্ত কবরীদের মত আশা আর নিরাশা মানবিক দ্বন্দে দোল খাচ্ছে মৃদু বাতাসে,, কারনে অকারনে হৃদয়-তনমন আচ্ছন্ন করে রাখছে নিদারুণ সব অপ্রাপ্যতা,,,,!
আঢ়ষ্ট করে রাখতে চায় আমার চাওয়া গুলোকে,,
শঠতা-নিচুতা-চাতুরী-চাটুকারিতা-এই যোগ্যতাগুলোকে থোরাই তোয়াক্কা করিনি কখনও,,
তাইতো আজকের পরিনত জীবনের আটপৌঢ়ে বাস্তবতায় অসঙ্গতিপূর্ণ পারিপার্শ্বিকতাগুলো মানতে কষ্ট হয়,,,,!
তবুও স্বপ্ন দেখি- স্বপ্নেরও গন্ডি পেড়িয়ে যাই- যা নয় তাই,,,! আসলে স্বপ্ন দেখা অনেক সহজ তো- স্বপ্ন দেখতে ব্যয়ের কোন বাধ্যবাধকতা নাই,,,!