deshbanglakhobor24
৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, এখন সময় রাত ৩:৪১ মিনিট
  1. অর্থ উন্নয়ন
  2. অর্থনীতি
  3. আইন ও অপরাধ
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. ইসলামিক
  7. কৃষি
  8. খুলনা
  9. খেলাধুলা
  10. গণমাধ্যম
  11. গল্প ও সাহিত্য
  12. চট্টগ্রাম
  13. ঢাকা
  14. তথ্য প্রযুক্তি
  15. দেশীয় শিল্প বাণিজ্য

ব্রেকিং নিউজ:

সৈয়দপুরে মাদরাসার ভবন নির্মান অসমাপ্ত রেখেই দুই বছর থেকে ঠিকাদার লাপাত্তা, ক্লাস হচ্ছে গাছতলায়

প্রতিবেদক
DBkhobor24
এপ্রিল ২, ২০২২ ১০:০৬ অপরাহ্ণ

শাহজাহান আলী মনন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
শিক্ষাঙ্গনের ভবন অর্ধ নির্মিত অবস্থায় রেখেই দুই বছর থেকে লাপাত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে অসমাপ্তই রয়ে গেছে এর নির্মান কাজ। এতে চরম বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
কক্ষ সংকটে ক্লাস নিতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে গাছতলায়। প্রখর রোদে পুড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থা চলছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আইসঢাল খিয়ারপাড়া আলিম অ্যান্ড ভোকেশনাল মাদ্রাসায়।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে গাছতলায় ক্লাস করছে। একজন শিক্ষক পাঠদান করছেন। সকলে রোদে পুড়ে ঘেমে অস্থির। প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুতের সংযোগ থাকলেও সেই সুবিধা নিতে পারছেন না তারা।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আফজাল বিন নাজির জানান, ১৯৫২ সালে ঐতিহ্যবাহী মাদরাসাটি গড়ে ওঠেছে। রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের পাশে মাদরাসাটিতে এবতেদায়ি, দাখিল, ভোকেশনাল ও আলিম শাখা রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় তিন শতাধিক। শিক্ষার্থীদের ফলাফল বেশ সন্তোষজনক।
তিনি জানান, মাদরাসাটির একটি চারতলা ভবন নির্মাণের জন্য গত ২০১৯ সালে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই বছরেই ৬ নভেম্বর ভবনের জন্য প্রথমত একতলা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। যা নয় মাসে শেষ করার কথা।
সেই অনুযায়ী ভবন নির্মাণের সুবিধার্থে মাদরাসার পুরনো টিনসেড ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। যথাসময়ে শেষ করাতে দূরের কথা দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়েও অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। একদিকে ভবন নির্মাণ হচ্ছে না অপরদিকে পুরনো শ্রেণিকক্ষ ভেঙে ফেলায় চরম শ্রেণি সংকট দেখা দিয়েছে।
এনিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন মাদরাসার অধ্যক্ষ। তবুও নির্বিকার কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি শিথিল হওয়ায় খুলে দেয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন ওই মাদরাসার কর্তৃপক্ষ। পাঠদান স্বাভাবিক রাখতে গাছতলায় খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছে। গত দুই দিন হঠাৎ বৃষ্টির কারণে তাও ব্যাহত হয়েছে।
মাদরাসাটির শিক্ষার্থীরা বলে, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় আমরা বড় কষ্টে আছি। ছেলে-মেয়েদের যেহেতু একই ক্লাসে পড়তে হয়, তাই অন্যান্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। রোদে কষ্ট করে ক্লাস করলেও বৃষ্টিতে চরম সমস্যায় পড়েছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিরাজ ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী সিরাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়। নয় মাসের কাজ তিন বছরেও কেন সম্পন্ন হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। এর মধ্যে আমার মা মারা গেছেন। একারণে একটু বিলম্ব হয়েছে। তবে খুব দ্রুত কাজটি শেষ করা হবে।
নীলফামারী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, আমার জানা মতে নির্মাণ কাজ থেমে নেই। আর যদি বন্ধ হয়ে থাকে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজটি কবে শেষ হওয়ার কথা ছিল? এমন প্রশ্নে তিনি হতচকিত হলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। (ছবি আছে)
উল্লেখ্য, এই মাদরাসা ভবন নির্মানে ঠিকাদার আরও ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছেন। নিম্নমানের ইট ব্যবহার করেছে। সিমেন্ট ও বালুর রেশিওর ক্ষেত্রে সিডিউল মানা হয়নি। তাছাড়া পুরনো জংধরা রড ব্যবহার করেছে। সঠিকভাবে পানি দেয়াও হয়নি।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে সত্যতা পেয়ে ঠিকাদার কে অবগত করলে তিনি নিজেকে একজন মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এব্যাপারে নাক না গলানোর জন্য বলেন।
পরে এই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হলেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ থাকার কারনেই ঠিকাদার এমন খামখেয়ালিপনা করছে বলে সচেতন মহলের অভিমত। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তথা সরকারের প্রতি।

সর্বশেষ - সারাদেশ