নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে গুটিকয়েক আবাসিক হোটেলে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। র্যাব পুলিশ অভিযান পরিচালনা করলেও থামছে না দেহ ব্যবসার কাজ। এসব আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসা পাশাপাশি চলে মাদক সেবন। এতে সামাজিক অবক্ষয়সহ অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শহরের প্রাণ কেন্দ্রের সাহেব বাজার এলাকার ৫ টি আবাসিক হোটেলে চলছে অবৈধ দেহ ব্যবসা। হোটেলগুলো হলো, গণপাড়া এলাকার হোটেল আশ্রয়, মুরগী পট্টি এলাকায় হোটেল সুরমা, মালোপাড়া স্বর্ণপট্টি এলাকার হোটেল ওয়েলকাম, ভুবন মোহন পার্ক সংলগ্ন হোটেল পদ্মা, লক্ষীপুর জিপিও সংলগ্ন বনলতা। এই সকল আবাসিক হোটেলের মুল হোতারা হলেন, মাইনুল ও কুতুব নামের দুই ব্যক্তি।
আবাসিক হোটেলের নামে পরিচিতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আড়ালে চলে আসছে অনৈতিক কাজ। প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। আর উক্ত হোটেলগুলোতে উঠতি বয়সী ছেলেদের আনাগোনাই বেশি। বিশেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। দীর্ঘদিন ধরে হোটেলগুলোতে এই ব্যবসা চলে আসছে, বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হোটেলগুলোর ম্যানেজাররা। অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করা হয় বলে জানান তারা।
সরেজমিন গিয়ে প্রতিবেদক দেখতে পায় সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন দালাল। যারা কাস্টমার নিয়ে হোটেলে ঢুকান। দ্বিতীয় ধাপে চলে কাস্টমারের পছন্দের নারী বাছাই পর্ব। কয়েকটি রুমে রয়েছে একাধিক নারী। বিভিন্নভাবে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করতে তারা ব্যস্ত। পছন্দ হলে চলে দরকষাকষি, বাস্তবে এমন চিত্র দেখা গেছে যে, দরকষাকষির এক পর্যায়ে হোটেল থেকে ফিরে আসতে গেলে যে কোনো একজন একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে কিছু অশ্লীল কথা বলে। একই সাথে বিভিন্নভাবে অঙ্গ-ভঙ্গির মাধ্যমে আকৃষ্ট করার চেষ্টাও করছে উঠতি বয়সের মেয়েরা। কৌশলে পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে কলেজের ছাত্রী বলে দাবি করেন একজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অবৈধ দেহ ব্যবসায় জড়িতরা বিভিন্ন স্কুল কলেজের মেয়ে। এদের বড় ধরনের নেটওয়ার্ক আছে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে এই অবৈধ ব্যবসা করেন তারা। সরেজমিন পরিদর্শনে হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং পতিতাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের চিত্র প্রতিবেদকের চোখে পড়ে। আবাসিক হোটেলের নামে দিনের পর দিন চলছে এই রমরমা দেহ ব্যবসা। এখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সী তরুণসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের আনাগোনা রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আবাসিক হোটেলে কর্মরত এক ব্যক্তি জানান, আমি এখানে চাকরি করি। হোটেলের মালিক পক্ষ বিভিন্ন বয়সের নারীদের নিয়ে এসে পতিতাবৃত্তি চালিয়ে আসছেন। এই হোটেলে যে কোনো সময়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ধরনের নারীর দেখা মিলবে বলে জানান তিনি।
আবাসিক হোটেলের নামে এই অবৈধ পতিতালয়ের ব্যবসার বিষয়ে আবাসিক হোটেলের ম্যানেজাররা জানান, আমরা কয়েকজন লোকাল মেয়েকে নিয়ে এ ব্যবসা করি এ কথা সত্য। অনেক কিছুই ম্যানেজ করে এ কাজ করি। এই নিউজ না করার জন্য প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন হোটেল ম্যানেজাররা।
উল্লেখ্য, র্যাব-৫ প্রতিনিয়ত আবাসিক হোটেল গুলোতে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। তবুও আড়ালে উক্ত হোটেলগুলোতে চলছে দেহ ব্যবসা।
এ বিষয়ে কথা বলতে আরএমপি পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুসকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে আরেকবার ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে হোটেল মালিক মাইনুল ও কুতুবকে ফোন দিলে তারা প্রতিবেদনকে দেখা করতে বলেন।