শরিফা বেগম শিউলী, স্টাফ রিপোর্টার।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আজমখাঁ গ্রামে নিখোঁজের এক রাত পর প্রতিবেশির শোয়ার ঘরের মেঝে খুড়ে সাইদুল ইসলাম নামে এক যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী বুলবুলিকে আটক করেছে পুলিশ।
স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের কারণে এই হত্যাকান্ড বলে রফিকুল পুলিশের কাছে দাবি করলেও পুলিশ সম্ভাব্য সবকিছুই খতিয়ে দেখছে। শুক্রবার সন্ধায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি অজিম উদ্দিনের পুত্র সাইদুল ইসলাম (২২) নামে যুবক সাইদুল ইসলাম। শনিবার বেলা ১১টার দিকে তার লাশ প্রতিবেশি চাচাতো ভাই রফিকুলের ঘরের মেঝে থেকে তোলার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনেরা।
শনিবার সকালে রফিকুলের বাড়ির উঠানে ছোপ ছোপ রক্ত ও বিভিন্ন কারণে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। পরে জেলা পুলিশের ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে পৌছান।
সকলের উপস্থিতিতে রফিকুলের শোয়ার ঘরের মেঝে খুড়ে তুলে আনা হয় সাইদুলের ক্ষতবিক্ষত লাশ।একজন গ্রামবাসী জানান, প্রথমে গ্রামের একটি ধান খেতে রক্তাক্ত একটি ছুড়ি পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে রফিকুলের বাড়ির উঠানে পাওয়া যায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। এরপর রফিকুলের শোয়ার ঘরের মেঝে নতুন করে লেপা (পানি ও মাটির প্রলেপ দেয়া)দেখে তাদের সন্দেহ বেড়ে যায়। সন্দেহ করেই তারা কাউনিয়া থানায় খবর দেন।
প্রতিবেশিরা নিহত সাইদুলকে ভালো ছেলে বলে চিনলেও রফিকুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন তারা। চানাচুর বিক্রি করে রফিকুলের জীবীকা চললেও তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে চুরিসহ বিভিন্ন ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছিলো। স্ত্রী বুলবুলির সঙ্গে পরকীয়ার জেরে সাইদুলকে খুন করার কথা রফিকুল পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে দাবি করলেও এর কোন প্রমাণ পায়নি পুলিশ। তাই সম্ভাব্য সব বিষয়েই তদন্ত করে দেখার কথা বলছেন রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।
রফিকুলকে গ্রেফতার ও তার স্ত্রী বুলবুলি বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, হত্যাকান্ড এবং লাশ গুমের ঘটনা একা রফিকুলের পক্ষে করা সম্ভব নয়। রফিকুল ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে বলে ধারণা করছেন তিনি।