বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটটির শুনানি হবে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রাফ্ট ইজ হিজ মিডল নেইম’ শিরোনামে একটি ইংরেজি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পশ্চিম ভিরুলিয়া সরকার বাড়ির ওসমান গনি সরকারের ছেলে মো. আব্দুর রহিম সরকার হাইকোর্টে এ রিট করেন।
রিটে জাহাঙ্গীর আলম মেয়র থাকাকালে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ দুদক আইনে বেঁধে দেওয়া সময়ে অনুসন্ধান শুরু বা শেষ করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং অবিলম্বে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন এবং আইন অনুসারে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
পাশাপাশি তদন্ত রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
রিটে বিবাদী করা হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, বিএফআইউ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র এবং জাহাঙ্গীর আলমকে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন গত ৩ অর্থবছরে (২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১) ৮টি এলাকায় বর্জ্য অপসারণে ব্যয় করেছে ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অথচ সেসব এলাকার কোনো আবর্জনা পরিষ্কার না করেই এর বিল পরিশোধ করা হয়েছে। জিসিসির তদন্ত প্রতিবেদনে বর্ণনা করা হয়েছে যে কীভাবে জাহাঙ্গীরের তত্ত্বাবধানে সব আইন উপেক্ষা করে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছিল।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল তাকে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেয়। এরপর তার দুর্নীতি ও অপকর্মের বিষয়গুলো আবারও সামনে আসে।
এর আগে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। ভিডিওতে তাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করতে এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে দেখা যায়। দল থেকে বহিষ্কারের ৭ দিন পর ওই বছরের ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সে সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ভূমি দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সরকারি অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগকে জাহাঙ্গীরের স্থগিতাদেশের কারণ হিসেবে উল্লেখ করে।
পরে মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এদিকে দলের পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার পর জাহাঙ্গীরের অনুসারীরা উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছেন। দলের ভেতরকার সূত্রগুলো বলছে, তারা এখন জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
তবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপরেই নির্ভর করছে এ সিদ্ধান্ত।
এ নিয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আমরা তা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেব।