বন ভবনে আলোচনা সভা হয়, এতে অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকঃ
বন অধিদপ্তরে নিয়োগের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
সোমবার (২১ মার্চ) নগরীর বন ভবনের হৈমন্তী মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক বন দিবস-২০২২ এর এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ কথা জানান।
বন ধ্বংস করে যাতে উন্নয়ন করা না হয়, সেই দিকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানান মো. শাহাব উদ্দিন।তিনি বলেন, বন রক্ষা করে দেশের উন্নয়ন না করলে তা টেকসই হবে না। বিশ্বজুড়ে বর্তমানে বন ও পরিবেশ বিষয়ক চিন্তাধারায় টেকসই উন্নয়নের ধারণা শক্তিশালী হয়েছে। বন রক্ষা করেই উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে।
এবছরের বন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার, টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার।’ মন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে দখল হয়ে যাওয়া বনভূমি পুনরুদ্ধারে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে বন বিভাগ। বনভূমি যাতে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার না হয়, সেদিকে আমরা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। বাংলাদেশের উন্নয়নকেও টেকসই ও সামাজিকভাবে হতে হবে, এ জন্য বন প্রতিবেশকে ধ্বংস করে যাতে উন্নয়ন না করা হয়, সেই দিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
সারাবিশ্ব বন উজাড় নিয়ে চিন্তিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন উজাড় হলে আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কিছু থাকবে না। আমাদের সবাইকে বন রক্ষা করতে হবে। বনের উন্নয়নে করতে হবে কাজ।
বন অধিদপ্তরের শূন্য পদে নিয়োগ প্রসঙ্গে মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, বন অধিদপ্তরের সব শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হবে। পাঁচজনের কাজ একজন করতে পারবে না। যতো নিয়োগ হবে ততোই বনের জন্য মঙ্গল। শূন্য পদ যাতে খালি না থাকে সেই জন্য প্রথমে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বলবো, যদি না হয় তবে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। বন ভূমি রক্ষা করতে হবে। যেখানে খালি জায়গা সেখানে গাছ লাগাতে হবে। বড় বড় গাছ সরকার হয় টাকা দিয়ে কিনে নেবে। সরকার পরিবেশ রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি পরিবেশ বিষয়ক নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। বনজ সম্পদ রক্ষা ও বন্য প্রাণী হত্যা রোধে বন বিভাগকে কাজ করতে হচ্ছে। আবার বনের প্রতিবেশ ব্যবস্থাকেও রক্ষা করতে হচ্ছে।
সুন্দরবন প্রসঙ্গে উপমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবন রক্ষা করতে হবে। অনেকে সুন্দরবন ধ্বংস করে ব্যবহার করছে। এটা যদি ধ্বংস হয়, তবে দেশের ক্ষতি ও যারা সুন্দরবন থেকে সুফলভোগ করেন তাদের ক্ষতি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মো. মোস্তফা কামাল বলেন, বন বিভাগ বর্তমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বন ব্যবস্থাপনা করছে। সামাজিক বন, ম্যানগ্রোভ বন, প্রাকৃতিক বন, উপকূলীয় বন, প্রটেকটেড এরিয়াসহ সব ব্যবস্থাপনার জন্য পৃথক পৃথক ম্যানেজমেন্ট প্লান তৈরি করা হয়েছে।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বন বিভাগ সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বন নির্ভর জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছে। তাদের বিকল্প জীবিকায়ন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বনের অনিয়ন্ত্রিত আহরণ কমানোর কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের জন্য স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। বিশ্বের আরও ১৯৫টি দেশের সঙ্গে আমরাও এই অঙ্গীকার করেছি যে, আগামী ১৫ বছর ধরে আমরা টেকসই উন্নয়নের পথে হাঁটবো।
এছাড়া মঞ্চে আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু।
জলবায়ু পরিবেশ-অধিদপ্তর