নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রামঃ
নন-বন্ডেড (লোকাল) তৈরি পোশাক রপ্তানির আড়ালে মুদ্রা পাচারের চেষ্টা করছিল ইনফিনিটি সার্ভিস সলিউশন নামে ঢাকার একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের তৎপরতায় প্রায় ২২ কোটি টাকা পাচারের চেষ্টা তা ভণ্ডুল হয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনালে (অফডক) এছাক ব্রাদার্স লিমিটেড ডিপোতে অভিযান চালিয়ে মুদ্রা পাচারের এ ঘটনা শনাক্ত করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এছাক ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মো. আহসান উল্লাহ জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে সোমবার (২১ মার্চ) পর্যন্ত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইনফিনিটি সলিউশন পাঁচটি পণ্যচালান রপ্তানি করেছে। এসব চালানেও পণ্য রপ্তানির আড়ালে অর্থপাচার করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ইনফিনিট সার্ভিস সলিউশনের পক্ষে ডায়নামিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্তৃক এছাক ডিপোতে তৈরি পোশাকের চালান জাহাজীকরণের জন্য কন্টেইনারে লোড করে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্য চালানে ৩৮ হাজার ৩১১ পিস তৈরি পোশাক রপ্তানির ঘোষণা দিয়ে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলেন।
৩৮ হাজার ৩১১ পিস তৈরি পোশাকের বিপরীতে ২১ হাজার ৯৭২ ডলার ৭৫ সেন্ট ঘোষণা দেয়, যাতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮ লাখ ৯০ হাজার ৭৫০ টাকা প্রাপ্য হতো। তবে ৩৮ হাজার ৩১১ পিস পোশাকের বদলে তারা ৮৩ হাজার ৩৫১ পিস রপ্তানির চেষ্টা করেন। চালানটি নিয়ে সন্দেহ হলে সোমবার শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এতে ঘটনার সত্যতা পান তারা।
কায়িক পরীক্ষা শেষে ৮৩ হাজার ৩৫১ পিস তৈরি পোশাকের মূল্য দাঁড়ায় ৪০ লাখ ৮৮ হাজার ২৪১ টাকা। ফলে ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৮৬ টাকা পাচারের চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ‘১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকার পণ্য ঘোষণা দিয়ে প্রায় ৪১ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানির চেষ্টা করছিল চক্রটি। এতে তারা প্রায় ২২ লাখ টাকা পাচারের অপচেষ্টা করেন। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ নিয়ে গত তিন মাসে বেশ কয়েকটি মুদ্রা পাচারের ঘটনা উদঘাটন করেছে কাস্টমস কর্মকর্তারা। এর আগে গত ১০ মার্চ ঢাকার অন্য একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘৫এফ অ্যাপারেলস লিমিটেড’র বিরুদ্ধে দুই লাখ তিন হাজার ২৮২ ডলার পাচারের সত্যতা পায় কাস্টমস। পরে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
রফতানি অর্থপাচার চট্টগ্রাম-বন্দর চট্টগ্রাম