নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প নীলফামারীর তিস্তা কমান্ড এলাকা গুলিতে পুর্নবাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পের কাজ চলছে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে। চলমান এ সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন হলে উত্তরের জেলা নীলফামারীর ১লক্ষ ৪ হাজার হেক্টর জমি অন্তর্ভুক্ত হবে সেচের আওতায়।এর ফলে বছরে প্রত্যেক রবি মৌসুমে বাড়তি উদপাদন হবে সেচনির্ভর বোরো ধান, আলু, গম, ভুট্টা, সরিষা, গাজর-টমেটোসহ বিভিন্ন ধরণের প্রায় ২৫ কোটি টাকার ফসল।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, নীলফামারী অফিস সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকা পুর্নবাসন ও সম্প্রসারণ ‘ক্যাড’ প্রকল্পের আওতায় ১কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান রয়েছে দিনাজপুর ক্যানেলের আউটলেট জলঢাকা-কিশোরগঞ্জ উপজেলার ১১ দশমিক ৮ কিলোমিটার এস ওয়ান এডি সেকেন্ডারি খালের ৮ ফুট প্রস্থ ডানতীর এবং ১০ ফুট প্রস্থ বামতীর ডাইক বাঁধে ৩৪ হাজার ৬১৫ ঘনমিটার মাটি ভরাট প্রকল্পের কাজ।
এছাড়াও ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে করা হচ্ছে একই আউটলেটে নীলফামারী সদর উপজলোর এস টু ডি সেকেন্ডারি খালের ৭ দশমিক ৮ কিলোমিটার ৮ ফুট প্রস্থ ডানতীর এবং ১০ ফুট প্রস্থ বামতীর ডাইক বাঁধে ৩২ হাজার ৫১৭ ঘনমিটার মাটি ভরাট ও সিসি লাইনিং কাজ। এর পাশাপাশি ৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয়ে করা হচ্ছে নীলফামারী সদর উপজেলার এস থ্রি ডি সেকেন্ডারি খালের ৪ দশমিক ৪১ কিলোমিটার ৮ ফুট প্রস্থ ডানতীর ও ৫ ফুট প্রস্থ বামতীর ডাইক বাঁধে ৩১ হাজার ৪৪ ঘনমিটার মাটি ভরাট ও সিসি লাইনিং কাজ।
এদিকে, নীলফামারী সদর উপজেলার টি ওয়ান এস থ্রিডি টার্শিয়ারি খালের ২ দশমিক ০৪ কিলোমিটার ৫ ফুট প্রস্থ ডানতীর ও ৮ ফুট প্রস্থ বামতীর ডাইক বাঁধে ১২ হাজার ২০ ঘনমিটার মাটি ভরাট ও সিসি লাইনিংয়ের কাজে ব্যয় ধরা
হয়েছে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা।অপর দিকে সদর উপজেলার টি টু এস থ্রিডি টার্শিয়ারি খালের ১ দশমিক ৮৫৩ কিলোমিটার পাঁচ ফুট প্রস্থ ডানতীর ও ৮ ফুট
প্রস্থ বামতীর বাঁধে ৪ হাজার ৩০ ঘনমিটার মাটি ভরাট ও সিসি লাইনিং কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ।
এছাড়াও ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার টি থ্রি এস থ্রিডি টার্শিয়ারি খালের ২ দশমিক ২৫৫ কিলোমিটার ডানতীর ৫ ফুট প্রস্থ ও বামতীর ৮ ফুট প্রস্থ ডাইক বাঁধে ৮ হাজার ৭৮৫ ঘনমিটার মাটি ভরাট ও সিসি লাইনিং কাজ। এই প্রকল্প গুলির কাজ সম্পন্ন হলে, ১লক্ষ ৪ হাজার হেক্টর জমি অন্তর্ভুক্ত হবে সেচের আওতায়।
কথা হলে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, নীলফামারী এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান প্রধান দেশবাংলা’কে বলেন, “নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে দ্রুত গতিতে চলছে প্রকল্পের কাজগুলি। আমরা আশা করছি,
যথা সময়ে প্রকল্পের কাজ গুলি সম্পন্ন হলে শতভাগ তিস্তার সেচ প্রকল্পের পানি পাবেন কমান্ড এলাকার কৃষকেরা”।বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, নীলফামারী এর নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল চন্দ্র সরকার জানান, “এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ জেলার ১লক্ষ ৪ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। বছরে প্রত্যেক রবি মৌসুমে উদপাদন হবে সেচনির্ভর বোরো ধান, আলু, গম, ভুট্টা, সরিষা, গাজর-টমেটোসহ বিভিন্ন ধরণের প্রায় ২৫ কোটি টাকার ফসল। এর ফলে জাতীয় র্অথনীতিতে কৃষি সেক্টর ব্যাপক অবদান রাখবে”।
জানতে চাইলে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নীলফামারী এর উপ-পরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে নীলফামারী জেলায় তিস্তা ক্যানেলের আওতায় ২৭৯ টি আউটলেটে মোট ১০,৮০৫ হেক্টর জমি তিস্তা ক্যানেল সেচ নির্ভর রয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক সেচ মৌসুমে এ জেলার বেশীর্ভাগ কৃষকই নিজস্ব
অর্থায়নে শ্যালোমেশিনসহ বিভিন্ন উপায়ে স্বীয় জমিতে সেচ প্রদানের মাধ্যমে চাষাবাদ করছেন। তিস্তার প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ন হলে, সেচ নিয়ে কৃষকদের কোন দুশ্চিন্তাই থাকবে না। পাশাপাশি কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে”।