নাসির উদ্দীন শাহ মিলন , নীলফামারী।
নীলফামারী ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নে হতদরিদ্রের জন্য নেওয়া চল্লিশ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচিতে টাকার বিনিময়ে পুরাতন শ্রমিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন শ্রমিক দিয়ে কাজ করার ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, অতিদরিদ্রের জন্য নেয়া কর্মসংস্থান মুলক কর্মসূচিতে মনগড়া শ্রমিকদের নামের তালিকা করা হয়েছে। প্রকল্পের শ্রমজীবীর তালিকায় রয়েছে অতিদরিদ্র বা দুস্থদের পরিবর্তে সুস্থ-স্বচ্ছলদের নাম। এতে ৪০দিনের কর্মসৃজন কর্মসুচির আওতায় মাটিকাটা কাজের তালিকাভুক্ত শ্রমিকের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে নতুন শ্রমিক অর্ন্তভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে বামুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সচিবের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনমের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে দেড় শতাধীক ভুক্তভোগি শ্রমিক।
অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, উপজেলার ৫নং বামুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদে গত অর্থ বছরে ওই কর্মসূচির আওতায় ১৬৭ জন হতদরিদ্র শ্রমিক লটারীর মাধ্যমে তালিকা ভুক্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে আসছে। গত ৫ জানুয়ারি নতুনভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে মোমিনুর রহমান নির্বাচিত হয়েছেন। এবং ৫নং ওয়ার্ডে তৎকালীন ইউপি সদস্য তিতাস রহমান বাবুর পরিবর্তে বর্তমানে লিটন নির্বাচিত হয়েছেন। এতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কিছু নতুন ইউপি সদস্য পদে আসেন।
নির্বাচনের পর উক্ত কর্মসুচির কাজ শুরু হলে তালিকা ভুক্ত শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে দেখেন পূর্বের সকল শ্রমিকের নাম বাদ দিয়ে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সচিবের জোগসাজসে পূর্বের শ্রমিকদের ছাঁটাই করে অর্থের বিনিময়ে যাছাই-বাছাই না করে তারা মনমতো কর্মসূচির আওতাভুক্ত নয় এমন ১২৪ জন নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে বলে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে তালিকাভুক্ত শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে তারা পরিবার নিয়ে অতি কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এ বিষয়ে বামুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনের মৌখিক নির্দেশনায় ৭০ শতাংশ পুরাতন শ্রমিকদের নাম বাদ দেওয়ার হয়েছে। তবে পুরাতন শ্রমিকদের বাদ দেওয়া যাবে কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই। তিনি আরো বলেন, নতুন চেয়ারম্যান মোমিনুর রহমান আমাকে যে তালিকা দিয়েছে আমি সেটাই জমা দিয়েছি।
তালিকায় বাদ পড়া ১নং ওয়ার্ডের সুবিধা-ভোগী শ্রমিক রেনুকা বেগম বলেন, মেম্বার তালিকা করার আগে আমার কাছে ৭ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি টাকা দিতে পারি নাই বলে আমার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, একই অভিযোগ করেন ওই ওয়ার্ডের আবদুল জব্বার, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাছিমা ও মর্জিনা বেগমসহ বাকী শ্রমিকরা।
একই অভিযোগে শান্তিবালা ও জিতেন জানান, এই কাজের জন্য আমরা পরিষদের সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। লটারীর মাধ্যমে আমাদের নাম উঠায় বিগত ৫ বছর যাবত কাজ করে আসছি। জানিনা কি কারণে এবার নতুন চেয়ারম্যান ও মেম্বার আমাদের নাম বাদ দিয়ে তাদের পছন্দের লোকের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে আমরা পরিবার নিয়ে অতি কষ্টে জীবন-যাপন করছি।
জানতে চাইলে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।