মো.শফিকুল ইসলাম,চট্টগ্রাম:
সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রাম মহানগরীর সবচেয়ে বড় অবৈধ ভিওআইপি ( VOIP ) ব্যবসার বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ প্রায় ৩,০০০ সীম উদ্ধারপূর্বক মূলহোতাকে আটক করেছে র্যাব -০৭ চট্টগ্রাম ।
অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না । হোয়াটস্যাপ , ফেসবুক , মেসেন্জার ইত্যাদি ওটিটির মতো উন্নত প্রযুক্তি এখন দেশে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হলেও কমেনি ভিওআইপির মাধ্যমে সাধারণ ফোনে কল আদান-প্রদান। ফলে বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ । বিভিন্ন পত্রপত্রিকার রিপোর্টে দেশে বর্তমানে বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল আসছে প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় দুই কোটি মিনিট ।
এর মধ্যে ৬০ লাখ থেকে ৭০ লাখ মিনিট কল আসছে রাষ্ট্রায়াত্ত টেলিকম প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে ( আইজিডাব্লিউ ) দিয়ে , আর বাকিটা আসছে বেসরকারি আইজিডাব্লিউ অপারেটর ফোরাম ( আইওএফ ) এর মাধ্যমে । অন্যদিকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন কোটি মিনিট কল এখনো ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের মাধ্যমে আসছে ।
র্যাব -৭ , চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে , চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মোহাম্মদপুর থাই ফুড এর ১০ তলা ইসলাম টাওয়ারের ৫ ম তলার দক্ষিণ দিকের ফ্ল্যাটে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সরকারী কর ( রাজস্ব ) ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভিওআইপি ব্যাবসা করে ও ডিওআইপি সরঞ্জামাদি হেফাজতে রেখেছে । উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ০৭ মার্চ ২০১২ ইং তারিখ ১৮১৫ পটিকার
র্যাব -৭ চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল এবং বিটিআরসির কর্মকর্তাসহ উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মো.নাছির উদ্দিন ( ৫৫ ) , পিতা-আব্দুল মোনাফ , সাং- বড় হাতিয়া , পোঃ – ভবানীপুর , থানা- লোহাগাড়া , জেলা- চট্টগ্রাম এ / পি – ইসমান টাওয়ার মোহাম্মাদপুর পাঁচলাইশ চট্টগ্রামকে আটক করে ।
পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আসামীর দেখানো ও শনাক্ত মতে তার হেফাজত থাকা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত ০৬ টি অত্যাধুনিক ডিওআইপি ব্যবসার এন্টিনা যুক্ত মেশিন,২৮৩০ টি টেলিটক সীম,১৬৫ টি এয়ারটেল সীম , ০১ টি ল্যাপটপ ,০৪ টি মোবাইল ,০৬ টি পাওয়ার সাপ্লাই,৩ টি মাল্টিপ্লাগ , ০৬ টি চার্জার ,০২ টি মডেম ,২৩ টি ক্যাবল , ০৩ টি রাউটার , ৫ টি আইপি , ১ টি এয়ারকুলার , ২ টি মাউস , ১৬০ টি খোলা এণ্টিনা ,২৫০ টি সিমের খালি প্যাকেট , ০১ টি নোস প্লাস, ২ টি স্ক্রু ড্রাইভার এবং এবং ১ টি টেপকাটার উদ্ধার করা হয় । উদ্ধারকৃত অবৈধ ভিওআইপির আনুমানিক মুল্য ৮২ লক্ষ টাকা ।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় , সে ২০১৬ সাল থেকে লাইসেন্স বিহীন অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে বাষ্ট্রের কোটি টাকা বাকি দিয়ে আসছে ।
উলেখ্য যে , সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাইশ থানায় ০২ টি সরকারী কর (রাজস্ব) ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে ডিওআইপির ব্যবসার মামলা রয়েছে । এছাড়াও ধৃতআসামি অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার জন্য
র্যাব কর্তৃক পূর্বে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্ত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।